অমুসলিমদের সঙ্গে বন্ধুত্ব। আমাদের জবাব। Our Answer
অমুসলিমদের সঙ্গে বন্ধুত্ব
‘তোমরা যখন দেশ—বিদেশে সফর করবে তখন যদি তোমাদের আশঙ্কা হয়, কাফেররা তোমাদের জন্য ফেতনা সৃষ্টি করবে, তবে নামায সংক্ষিপ্ত করলে তোমাদের কোনো দোষ নেই। নিশ্চয়ই কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ [নিসা : ১০১]
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الْیَهُوْدَ وَالنَّصٰرٰۤی اَوْلِیَآءَ ۘؔ بَعْضُهُمْ اَوْلِیَآءُ بَعْضٍ ؕ وَمَنْ یَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاِنَّهٗ مِنْهُمْ ؕ اِنَّ اللهَ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদের একজন হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [মায়েদা : ৫১]
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الَّذِیْنَ اتَّخَذُوْا دِیْنَكُمْ هُزُوًا وَّ لَعِبًا مِّنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ اَوْلِیَآءَ ۚ وَاتَّقُوا اللهَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে যারা তোমাদের দীনকে হাসি—তামাশা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে তাদেরকে ও কাফেরদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং যদি মুমিন হও তবে আল্লাহকে ভয় করো।’ [মায়েদা : ৫৭]
﴿۲۲﴾ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْۤا اٰبَآءَكُمْ وَ اِخْوَانَكُمْ اَوْلِیَآءَ اِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَی الْاِیْمَانِ ؕ وَمَنْ یَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাই যদি ঈমানের পরিবর্তে কুফরিকে শ্রেয় জ্ঞান করে, তবে তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করবে না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারা জালেম।’ [তওবা : ২৩]
প্রথম আয়াতে তথা সুরা নিসার ১০১ নং আয়াতে মক্কাবাসী সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। মুসলমানরা যেনো ধেঁাকা না খায় এবং সেই বন্ধুবেশী শত্রুদের শিকারে পরিণত না হয়। এই আয়াত মূলত মক্কার মুশরিকদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে।
পরের আয়াত (সুরা নিসার ১০২ আয়াতে) সালাতুল খাওফ তথা ভয়ের নামাজের আলোচনা এসেছে। অর্থাৎ যখন সবাই রণাঙ্গনে থাকে, উভয় দল ময়দানে কাতাব বেঁধে দাঁড়ায় তখন মুসলমানগণ কীভাবে নামায পড়বে? কারণ মক্কাবাসী তখন আক্রমণ করতে পারে। আয়াতটি সকল অমুসলিমদের ব্যাপারে নয়। রাসুলের আমল এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। কারণ তিনি মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন, নাজরানের খৃস্টানদের সঙ্গে সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন, বনি খুযায়াকে কাফের হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের মিত্র বানিয়েছেন।
এ ধরনের সন্ধিচুক্তি তিনি অন্যান্য অমুসলিম কবিলার সঙ্গেও করেছেন। যদি কাফেরদের সঙ্গে কিছুতেই বন্ধুত্বের অনুমতি না থাকতো, সর্বাবস্থায় তাদেরকে শত্রু ভাবা হতো, তাহলে প্রশ্ন হয়, তিনি কীভাবে সেসব অমুসলিম গোত্রকে নিজের মিত্র বানিয়েছেন?
দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াতের প্রেক্ষাপট হলো, মুসলমানগণ বারবার ইহুদিদের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি করতো আর তারা ভঙ্গ করতো। এমনকি খন্দক যুদ্ধে ওরা প্রকাশ্যে মক্কাবাসীর সঙ্গে মিলে মুসলমানদের মূলোৎপাটনের জন্য সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করেছে।
ইহুদিরা হযরত ঈসা আ. কে অপবাদ দেয় এবং জারজ সন্তান বলে গালি দেয়। তাঁর ওপর অভিশাপ দেয়। হযরত মারয়াম আ. কে অপবাদ দেয়। পবিত্র কুরআন স্পষ্ট ঘোষণা করেছে, হযরত ঈসা আ. ছিলেন নবী। তাঁর ওপর এবং তাঁর মায়ের ওপর যে অপবাদ দেয়া হয় সেটা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, খৃস্টানরা মুসলমানদের সমর্থন করার পরিবর্তে, তাদের দাওয়াত কবুল করার পরিবর্তে, তাদের নবীকে যারা গালি দেয় সেই ইহুদিদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। এজন্য মুসলমানদের বলা হয়েছে, তাদের কাছে তোমরা গোপন কথা বলবে না। কেননা এমন কঠিন মতানৈক্য সত্ত্বেও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদি, খৃস্টান ও মক্কার মুশরিকরা ছিল পরস্পরের সঙ্গী। সুতরাং মুসলমানগণ যেনো নিজেদের গোপন কথা বলে বিপদে না পড়ে।
পঞ্চম আয়াতে মুসলমানদের বলা হয়েছে, খুনী আত্মীয়—স্বজনের পরিবর্তে ধর্মের সম্পর্ক আরো গভীর ও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ যদি কেউ ইসলাম গ্রহণ করে আর তার পিতামাতা, ভাই—বোন কাফের থাকে, এমন যেনো না হয়, আত্মীয়—স্বজনের মহব্বত তাকে সত্যধর্ম থেকে বিচ্যুত করে দেয়। কেননা যেখানে হক—বাতেলের লড়াই—একদিকে সত্য ও সততা, অন্যদিকে আত্মীয়—স্বজন, সেখানে সত্য ও সততাকে আত্মীয়—স্বজনের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে। এটা উন্নত চরিত্রের শিক্ষা। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এ শিক্ষা মনে রাখা আবশ্যক।
আয়াতের উদ্দেশ্য এটা নয়—অমুসলিম আত্মীয়—স্বজনকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে; তাদের সঙ্গে সদাচার করা যাবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাবস্থায় আত্মীয়—স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজেও অমুসলিমদের সেবা করেছেন। দুর্ভিক্ষের সময় মক্কার কাফেরদের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছেন। হযরত ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু এক মুশরিক আত্মীয়ের জন্য রেশমি আবা পাঠিয়েছেন। কোনো কোনো সাহাবির মা তাদের মুসলমান হওয়াতে ছিলেন ভীষণ অসন্তুষ্ট। প্রতিবাদ—স্বরূপ তারা খাওয়া—দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের নসিহত করেছেন, সর্বাবস্থায় ঈমানের ওপর অটল থাকতে। তবে এটাও লক্ষ্য রাখতে বলেছেন, যেনো পিতামাতার সঙ্গে অসদাচার না হয়। যদি অমুসলিম আত্মীয়—স্বজনের প্রতি ঘৃণা—বিদ্বেষ শিক্ষা দেয়া হতো তাহলে মুসলমানগণ এমন সদাচার কেনো করলেন? আসল কথা হলো, এখানে موالات বলে সর্বপ্রকার বন্ধুত্ব উদ্দেশ্য নয়, বরং এমন বন্ধুত্ব উদ্দেশ্য যেটা মানুষের চিন্তাচেতনায় প্রভাব ফেলে। নিজেদের একান্ত গোপন কথা যেটা অন্যরা জানলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা এমন কথা বলা যাবে না। এমন গভীর সম্পর্ককে মূলত موالات বলা হয়।
আসল কথা হলো, সম্পর্কের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। হাকিমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবি রহ. বিষয়টা এভাবে বর্ণণা করেছেন। সম্পর্ক চার প্রকার হতে পারে— مدارات مواساة— معاملات— موالات—
مدارات হলো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক; সদাচার ও শিষ্টাচার। অমুসলিমদের সঙ্গে এটা শুধু জায়েয নয়, বরং নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত مواساة তথা সহমর্মিতা ও সাহায্য—সহযোগিতা। অমুসলিমদেরকে সহযোগিতা করা এবং সহমর্মিতা দেখানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তৃতীয়ত معاملات তথা আর্থিক লেনদেন, ব্যবসা—বাণিজ্য ও চাকরিবাকরি ইত্যাদি। এতেও মুসলিম অমুসলিমের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। চতুর্থ স্তর হলো موالات। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, এমন বন্ধুত্ব যাতে মানুষ একে অন্যের সভ্যতা—সংস্কৃতি গ্রহণ করে এবং নিজের গোপন কথা বলে। পরিণামে যেহেতু তার ক্ষতি হতে পারে তাই কুরআনে এমন বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে।
অমুসলিমদের সঙ্গে বন্ধুত্ব
এই নিষেধাজ্ঞার কারণেই মুসলিম অমুসলিমদের মাঝে বিয়েশাদি হতে পারে না; একে অন্যের মিরাসের অধিকারী হয় না।
এসব আয়াতের ব্যাপারে দুটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। প্রথমত এসব আয়াতও ওই সকল কাফেরদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে যাদের সঙ্গে মুসলমানদের লড়াই চলছিল। দ্বিতীয়ত এতে সর্বপ্রকার বন্ধুত্ব নিষেধ করা হয়নি; বরং এমন বন্ধুত্ব নিষেধ করা হয়েছে যাতে মুসলমানগণ নিজেদের সভ্যতা—সংস্কৃতি বিসর্জন দিয়ে বসে। অন্য সম্প্রদায়ের সভ্যতাগত ও চিন্তাগত আগ্রাসনের শিকার হয়। অথবা যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তাদের কাছে নিজেদের গোপন কথা পেঁৗছলে পুরো মুসলিম জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমার বিশ্বাস, কোনো আত্মমর্যাদাশীল জাতি—যারা নিজেদের সভ্যতা—সংস্কৃতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর—তাদের কাছে এটা নিন্দনীয় বিষয় নয়। আজো আন্তর্জাতিকভাবে প্রত্যেক জাতির নিজস্ব সভ্যতা—সংস্কৃতি সংরক্ষণের অধিকার স্বীকৃত। নিজস্ব সভ্যতা—সংস্কৃতি যেনো কোনোভাবে ক্ষুণ্ণ না হয়।
আমাদের দেশেও ছোট ছোট সভ্যতা—সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য কোনো কোনো প্রদেশে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যেমন সেখানে অন্যরা জমি কিনে বসবাস করতে পারে না। এমনকি কোথাও কোথাও রাষ্ট্রীয় আইনের ওপর প্রাদেশিক আইনকে প্রাধান্য দেয়া হয়। এটা কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা সৃষ্টি নয়; বরং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবাস করতে গিয়ে নিজস্ব সভ্যতা বজায় রাখার প্রয়াসমাত্র। এবং নিজেদের ধর্মীয় মূল্যবোধে অটল থাকার শিক্ষা।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, হিন্দুধর্মে যারা অধার্মিক, হিন্দুধর্ম বিশ্বাস করে না, তাদের ব্যাপারে সাধারণত ‘দুশমন’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। বরং এমনভাবে তাদের উল্লেখ করা হয় যেনো তাদের নামটাই শত্রু। কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেয়া যাক—
আমরা তোমার সাহায্যে সম্পদ অর্জন করবো এবং তোমার সাহায্যে আরিয়াদের শক্তি—সামর্থে নিজেদের সমস্ত বৈশ্য দুশমনকে পরাজিত করবো।
হে বাহাদুর! আমরা তোমার সাহায্যে উভয় প্রকার শত্রুদের হত্যা করে সুখী—সচ্ছল হবো।
শত্রুদের হত্যাকারী দৈত্যরা! বৈশ্যদের বিনাশকারীরা!
তুমি আমাদের শত্রুদের হত্যা করো এবং নিহত শত্রুদের পদদলিত করো।
হে ইন্দ্র ও শর্মা! তুমি খবিস দুশমনকে জ্বালিয়ে দাও।
মোটকথা হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থে যারা হিন্দুধর্ম মানে না, অথবা যাদেরকে আরিয়া বংশোদ্ভূত হিসাবে নীচু বর্ণের মনে করা হয়, তাদের জন্য সাধারণত শত্রু শব্দ ব্যবহার করা হয়। হতভাগা শুদ্র সম্প্রদায়—যাদের কথা পূর্বে চলে গেছে—যদি তাদের ব্যাপারে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থের নির্দেশনা দেখা হয়, তাহলে দেখা যাবে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য ছাড়াও তাদের প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ করা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে আছে, উঁচু জাতের লোকেরা তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না এবং তাদের সঙ্গে কখনো বন্ধুত্ব করবে না। যেমন মনুজি শুদ্রদের ব্যাপারে নির্দেশ দেন—
তারা কোনো ভ্রাতৃবর্হিভূত লোকের সঙ্গে অথবা কোনো চাঁড়ালের সঙ্গে একই গাছের ছায়াতলে অবস্থান করবে না।জানা কথা, চাঁড়াল দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ওই ব্যক্তি যে শুদ্র পুরুষ ও ব্রাহ্মণ নারীর মিলনে জন্ম নেয়।
কেউ যদি শুদ্রকে ধর্মশিক্ষা দেয় বা ধর্মীয় আচার শেখায় সে শুদ্রের সঙ্গে অসংবৃত নামী নরকে থাকবে।
চাঁড়াল ও সৈন্যবাহিনীর লোকেরা বস্তির বাইরে বসবাস করবে।
ব্রাহ্মণরা শুদ্রদের থেকে একটা দানাও গ্রহণ করবে না।
এখানে শুধু কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেয়া হলো। অন্যথায় মনুশাস্ত্রে এমন শিক্ষা অগণিত। শুদ্রদের এতোটা ঘৃণিত মনে করা হয় যে—
যদি ব্রাহ্মণ কোনো বিড়াল, নেউলে, ইঁদুর, ব্যাঙ, কুকুর, টিকটিকি বা পেঁচা অথবা কাক মেরে ফেলে তাহলে তাকে সে কাফফারা দিতে হবে শুদ্রকে মেরে ফেললে যে কাফফারা দিতে হয়।
দেখুন, শুধু বংশ ও ধর্মের ভিত্তিতে এক শ্রেণিকে কতোটা ঘৃণা ও শত্রুতার দৃষ্টিতে দেখা হয়! আর মানুষকে কীভাবে তাদের থেকে দূরে থাকতে বলা হয়!
কোন মন্তব্য নেই